![]() |
আল্লামা মামুনুল হক। |
মানুষ ও বন্ধু হিসেবে তিনি অনন্য
------------------------------------***
তাকে পড়তে জানা লোকের সংখ্যা কম। তিনি প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী, দীর্ঘ কা রা বাস তাকে উদার করে তুলেছে।
হুট করেই এই তাকে নিয়ে লিখতে বসলাম। বয়সে তিনি আমার বড়, এটা খুব নতুন তথ্য নয়; স্বাভাবিক কথা। তবে সম্পর্ক ভালো। হ্যাঁ, ভালো মানে ভালো।
নানা সময়ে, নানা উপলক্ষে দেশ-বিদেশে একসঙ্গে সফর করার সুযোগ হয়েছে। সহযাত্রী ও বন্ধু হিসেবে তিনি বিরল গোত্রের। রাজনৈতিক নেতা, শা য় খু ল হাদিস, কোরআনের হাফেজ, লেখক ও সম্পাদকসহ নানা অভিধা ছাপিয়ে তিনি পরিণত হয়েছেন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে। সুতরাং তিনি ভীড়ের কারণ। এই ভীড় তার আকাশে ওড়ার কারণ হয়নি।
আলোচনায় যুক্তি, পাল্টা যুক্তি, রেফারেন্স উপস্থাপন তাকে প্রজ্ঞাবান ও সুতীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী করে তুলেছে। রাজনীতিতে প্রথাগত সফলতা এখনও আসেনি, তবে চেনা কক্ষপথেই হাঁটছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
সংস্কার-পরবর্তী পর্যায়ের সমাজব্যবস্থা নিয়ে তার রয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ চিন্তা। এর কিছুটাও বাস্তবতার মুখ দেখলে, তাকে জাতি সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা হিসাবেই মনে রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
শুধু আমি নই, আমার পরিবারের সদস্যদের কাছেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ। অসংখ্য মানুষের প্রিয়ভাজন তিনি। অনেক কথা ও পরিকল্পনার মেরুকরণে তিনি এখন মহীরুহ।
বন্ধু হিসাবে তিনি ব্যতিক্রমী। বিনয়ী, মৃদুভাষী এবং এমন একজন মানুষ, যিনি মৌলিক ভদ্রতাবোধ থেকে কখনও বিচ্যুত হন না। মেধার সম্মান করেন, ভালো কাজের ভূয়সী প্রশংসায় কৃপণতা নেই। যোগ্যকে স্থান ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই। ভুলটা সুন্দরভাবে ধরিয়ে দেন, পরমযত্নে রাস্তা বলে দেন। রাগ প্রকাশেও সংযত আচরণ করেন, আর পরামর্শ শোনেন খুব মন দিয়ে। এমনসব গুণের কারণে রাজনীতির ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে ওঠছেন। আলাপে-আড্ডায় নিজের ন্যায্য প্রশংসাতেও অস্বস্তিবোধ করেন। বন্ধুত্বের মূল্যটা এখানেই নির্ণয় করা যায়।
তাকে নিয়ে কাটানো উদ্বেগের সময়গুলো ব্যাখ্যাতীত। হুকমতের প্রতিহিংসা, স্বগোত্রীয়দের কূটচাল ও বিদেশি প্রেসক্রিপশন নিয়ে তাকে দমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাকে নিয়ন্ত্রণে নিতে অনেকের ছিল নিরন্তর চিন্তা ও চেষ্টা। নিয়ন্ত্রিত হওয়ার অতিজটিল প্রক্রিয়াও তিনি সহজেই ছিন্ন করার কাজটি করেছেন বেশ দক্ষতার সঙ্গে।
আমি তাকে যতখানি চেনার সুযোগ পেয়েছি, তাতে আমি নিশ্চিতভাবে জানি যে, আত্মার ব্যাধিগুলোকে তিনি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখেন। আর নতুন যেকোনো চিন্তাকে কতটা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান।
বহুমতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও একসঙ্গে চলার বিরল গুণ তার রয়েছে। তার এমন স্বভাব নিয়ে বিপুল বিতর্কও রয়েছে। তার পরও তিনি ভিন্নমতের বন্ধুদের সঙ্গ উপভোগ করেন। এমন সাক্ষাৎকে স্মরণীয় করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেন না।
তিনি নতুন নতুন চিন্তাকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসেন। তার সব ভাবনার সঙ্গে সবাই হ্যাঁ কিংবা জ্বী হুজুর-হুজুর করবে এটা ভাবেন না। এই চিন্তায় ওই ভাবনা ত্যাগও করেন না। এমন খোলা মনের কারণেই তিনি বিরল। ফলে তার নেতৃত্বে নতুন কক্ষপথে হাঁটছে তরুণরা। তাদের এই অভিযাত্রা সফল হোক, বাংলাদেশ খুঁজে পাক নতুন কিছু।
0 মন্তব্যসমূহ